হিংসুক ও খারাপ চরিত্রের কিছু মানুষ হিংসা ও শত্রুতার জের ধরে এমন জাদুও করে যেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে যায়, আর্থিক আয় উন্নতি না হয়, কোনভাবেই অর্থনৈতিকভাবে সফল না হতে পারে, অসচ্ছলতায় ভোগে এবং দরিদ্র হয়ে যায়। বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হতে পারে কিন্তু এর বাস্তবতা রয়েছে এবং সমাজে এরকম অহরহ ঘটছে। এই জাদুতে কেউ আক্রান্ত হলে দেখা যায় সে অনেক টাকা ইনকাম করলেও তাতে বরকত পায়না, টাকা জমা হয়না, ইনভেস্ট করলে ধরা খায়, ইনকামের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
আধুনিকতার এই যুগে অতি আধুনিক মনা ও ইসলামের পুরোপুরি জ্ঞান না থাকায় অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না, ভাবেও না যে, জ্বীন জাদু বা বদনজরের কারণে এরকম হতে পারে। তাই তারা এটাকে পাত্তা দেয় না। এমন অনেকেই আছে এক সময় আর্থ অবস্থা, ব্যবসা থাকলেও হঠাৎ ধীরে ধীরে ধস নামতে থাকে, উন্নতি হয়না, আর এ নিয়ে পেরেশান থাকে। লস হলেও ঋণ, লোন নিয়ে আবার ব্যবসায় ইনভেস্ট করে। দীর্ঘ সময় পর সবকিছু হারিয়ে অনেকেই আবার বিশ্বাস করে। বুঝতে পারলে তখন আবার বিভিন্ন হুজুর সহ তান্ত্রিক কবিরাজ ও ওঝা-ফকিরের কাছে দৌড়ঝাঁপ করে।
ইসলামের আলো দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়া এবং বিজ্ঞানের আলো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও অনেক মুসলিম সালাত আদায়কারী ভাইও সম্পদ বৃদ্ধির জন্য তাবিজ-কবজ এবং বিভিন্ন শিরকের আশ্রয় নেয়। ঘরে, দোকানে এগুলো টাঙিয়ে রাখে , দেয়াল ও গাড়িতে লাগিয়ে রাখে এবং শরীরে ঝুলিয়ে রাখে। এমনকি অনেক আলেম ও দ্বীনি ভাইয়েরা তাবিজ কবজ ব্যবহার না করলেও ভুলবশত আয়াতুল কুরসি, চারকুল ও বিভিন্ন দুআ বরকতের উদ্দেশ্যে দোকান, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও বাসায় লাগিয়ে রাখে। আস্তাগফিরুল্লাহ! অথচ কুরআনের সূরা, আয়াত এবং যেকোনো দুআ এভাবে ঝুলিয়ে রাখাতে কোনো ফায়দা নেই, এটা তারা বুঝেন না। খুবই দুঃখজনক!
এই জাদুর উদ্দেশ্য হচ্ছে একজন ব্যক্তির জীবিকাকে সীমিত করা। আর্থিকভাবে অসফল ও অসচ্ছল করা এবং ব্যক্তি দরিদ্র হয়ে যাওয়া। আর জ্বীন শয়তান ও মানব শয়তানের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা একটা পরীক্ষা যে তারা মানুষের কাছ থেকে কল্যাণকে বাধা দিতে সফল হয়।
তবে এইগুলো কেবল একটি কারণ মাত্র। আর এটা জানা কথা যে আল্লাহ তাআলা রিযিক দাতা। কেউ কারো রিযিক বন্ধ করতে পারে। আল্লাহ তাআলা কারো কল্যাণ চাইলে সেটা প্রতিহত ও দূর করার ক্ষমতা কারো নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন- আল্লাহ যদি তোমাকে কোনও কষ্ট দান করেন, তবে তিনি ছাড়া এমন কেউ নেই, যে তা দূর করবে এবং তিনি যদি তোমার কোনও মঙ্গল করার ইচ্ছা করেন, তবে এমন কেউ নেই, যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ দান করেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা ইউনুস ১০৭)
আল্লাহ তাআলা সূরা বাকারায় আরো বলেছেন যে, আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউ কারো ক্ষতি করতে পারে না।
মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- তথাপি তারা তাদের থেকে এমন জিনিস শিক্ষা করত, যা দ্বারা তারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত, (তবে প্রকাশ থাকে যে,) তারা তার মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কারও কোন ক্ষতি সাধন করতে পারত না। ৭৪ (কিন্তু) তারা এমন জিনিস শিখত, যা তাদের পক্ষে ক্ষতিকর ছিল এবং উপকারী ছিল না। আর তারা এটাও ভালো করে জানত যে, যে ব্যক্তি তার খরিদ্দার হবে আখিরাতে তার কোনও হিস্যা থাকবে না। (সূরা বাকারাহ ১০২)
এখানে তাকদিরের একটি বিষয় উল্লেখ করা জরুরী। এতে বিষয়টি আরো স্পষ্ট বুঝা যাবে এবং সন্দেহ ও প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। ইনশাআল্লাহ।
উদাহরণ-১: ধরুন ঢাকার বসুন্ধরা থেকে যাত্রাবাড়ী যাওয়ার তিনটা রাস্তা আছে, একটা রাস্তা সোজা, আরেকটা রামপুরা দিয়ে। যেটাতে গেলে তুলনামূলক একটু বেশি সময় লাগবে। আরেকটা বনশ্রী দিয়ে স্টাফ কোয়ার্টার হয়ে, যেটাতে তুলনামূলক আরো অনেক বেশি সময় লাগবে।
এখন আপনার ইচ্ছা যেকোনো রাস্তা দিয়ে যেতে পারবেন। সোজা রাস্তায় না গিয়ে যদি অন্য রাস্তা দিয়ে যান তাহলে তুললামূলক বেশি সময় লাগবে। অথচ আপনি চাইলে সহজে কম সময়ে পৌঁছাতে পারতেন।
উদাহরণ-২: আল্লাহ তাআলা বিষ এর মধ্যে এক ধরনের প্রভাব এবং মরন প্রতিক্রিয়া দিয়ে রেখেছেন। এখন যদি কেউ আপনাকে কোনোভাবে খাইয়ে দেয় বা আপনি নিজেই খেয়ে নেন তাহলে মারা যেতে পারেন। আর যদি সতর্ক থাকেন, না খান তাহলে বিষ ক্রিয়ায় মারা যাবেন না। তবে আল্লাহ তাআলা চাইলে বিষ পানের পরও বেঁচে যেতে পারেন।
তাকদীর দুই প্রকার,
একঃ তাকদীরে মাবরুর , অর্থাৎ যেটা কোন সময় পরিবর্তন হয়না। যেমনঃ মৃত্য যখন তাকদীরে লেখা আছে তখন হবে ।
দুইঃ তাকদীরে মুয়াল্লাহ যেটা মানুষের কর্ম তথা তাদবীরের কারণে পরিবর্তন হয় ,যেমন মানষের জীবনে সুখ শান্তি এবং দুঃখ কষ্ট ইত্যাদী মানুষের কর্মের উপর নির্ভর করে ।
যেমন আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সূরায়ে শুরার ৩০ নং আয়তে ইরশাদ করেন, আয়াত
وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِير
“তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।
এবং আল্লাহ তায়’লা সূরায়ে রুমের ৪১ নং আয়াতে এরশাদ করেন,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
“স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।”
এবং আল্লামা নাসাফী (রঃ) শারহুল আকাঈদ নামক গ্রন্থে লেখেনঃ আল্লাহ তায়া’লা কিছু কাজ মানুষের উপর ছেড়ে দিয়েছেন , যদি কেহ ভাল কাজ করে তাহলে সে সুওয়াব পাবে, আর ,যদি খারাপ কাজ করে তাহলে আযাব ভুগ করতে হবে। সুতরাং যদি কাহারো ভাগ্যে বিফলতা লেখা থাকে তাহলে সে পরিশ্রম তথা ভাল কাজের মাধ্যমে সফলকাম হতে পারে।
অর্থাৎ তাকদিরের একটি পর্যায় হচ্ছে অপশনাল এবং ব্যক্তির ঐচ্ছিক বিষয়। আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন বিষয়ের জন্য একাধিক অপশন তৈরি করে রেখেছেন এবং মানুষকে ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন। যেমন একজন আপনার কাছে তার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রাস্তার পরিচয় জানতে চাচ্ছে, এখন আপনি চাইলে তাকে সঠিক রাস্তাটি বলে দিতে পারেন কি চাইলে মনের কুটিলতার কারণে তাকে ভুল রাস্তা বলে দিতে পারেন। সঠিক রাস্তা বলে দিলে আপনার নেকি হবে আর ভুল রাস্তা বললে আপনার গোনাহ হবে।
তেমনি রিযিকের বিষয়টি। এমনকি জ্বীন জাদু বদনজর সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রেই। আপনার তকদিরে রিযিক লিখা আছে। চেষ্টা করলেই এখন তা আপনি অর্জন করবেন। কিন্তু এটাও লিখা আছে যে, জ্বীন জাদু ও বদনজরের কারণে রিযিকে সংকীর্ণতা আসতে পারে। এটাও লিখা আছে যে, আপনি এইগুলো থেকে বাঁচার জন্য পূর্ব থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করলে, নিরাপত্তার আমল করলে এই বিপদ আসতো না। বা আক্রান্ত হওয়ার পর সেইসব প্যারানরমাল সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে আক্রান্ত সমস্যা ও রিযিকের সংকীর্ণতা দূর হয়ে যাবে। আল্লাহর কাছে দুআ করলে বারাকাহ পাবেন। আশাকরি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছেন।
আর্থিক ক্ষতি বা ব্যবসায় লোকসান হওয়া মানেই কি জ্বীন জাদুর প্রভাব?
আর্থিক অবনতি, ব্যবসায় লোকসান হওয়া মানেই জ্বীন জাদুর কারণে হয়েছে এমনটি নয়। বরং নরমাল বা স্বাভাবিক বিষয় ও হতে পারে। ব্যক্তির অসতর্কতা, নির্বুদ্ধিতা, অসততা, অদক্ষতা, সরলতা এবং পলিসি ম্যাকিংয়ের অভাবের কারণেও হতে পারে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণেই হতে পারে।
দুঃখজনক বিষয় হলো, সম্পদ বা ব্যবসায় লোকসান বা ক্ষতিগ্রস্ত হলেই অনেকেই মনে করে কেউ হয়তো জাদু করেছে, হিংসা করছে। তখন অনেকে সমাজে জেঁকে বাসা কবিরাজ তান্ত্রিকদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। আর কবিরাজ তান্ত্রিকরা চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক দ্বীনি ভাই-বোনও তাদের কাছে যায়। খুবই হাস্যকর! এসবের জন্য তারা আল্লাহর কাছে সাহায্য না চেয়ে এসব ভন্ড কবিরাজ তান্ত্রিকদের ধর্না দেয়। অথচ রিযিকের পেরেশানি দূর করা এবং রিযিকে বারাকাহ লাভের অসংখ্য নির্দেশনা বর্ণিত রয়েছে কুরআন-হাদীসে। আর সম্পদ বৃদ্ধিতে এসব তাবিজ কবজের না আছে শরয়ী কোনও ভিত্তি, আর না আছে সাইন্টিফিক কোনো ব্যাখ্যা ও বাস্তবতা। প্রতারক ভন্ড কবিরাজ তান্ত্রিকদের কাছে গিয়ে অবশিষ্ট অর্থ-সম্পদও শেষ করে এবং মহামূল্যবান সম্পদ ঈমানকেও হারায়!
সম্পদ বা ব্যবসায় জাদুর বাস্তবতা ও স্বরুপ।
জ্বীন জাদু ও নজরের কারণে এমন না যে, টাকা গাছের পাতা হয়ে যাবে বা সাদা কাগজ হয়ে যাবে। বরং বিভিন্নভাবে আর্থিক ইনকামে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন অনেক বেশি অপ্রয়োজনীয় খরচ হয়ে যেতে পারে, যেটা আপনার কাছে প্রয়োজনীয় খরচ হতে পারে। আর্থিক অবনতি ও বাধাগ্রস্ত হওয়ার অনেক ধরণ ও স্বরূপ হতে পারে। নিম্নে কিছু উল্লেখ করছি।
১। ব্যক্তিকে কাজ করা থেকে বিরত রাখা।
২। তাকে তার জীবিকা সন্ধান করা থেকে বিরত রাখা।
৩। কাজকে ঘৃণা করা।
৪। অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত খরচ করা।
৫। অতিরিক্ত খরচ হওয়ায় দিন দিন ঋণ বেড়ে যাওয়া।
৬। চাকরি না হওয়া, ইন্টারভিউ দিলেও রেজাল্ট ভালো না হওয়া।
৭। বারবার চাকরি চলে যাওয়া।
৮। চাকরি অনুপযুক্ত মনে হওয়া এবং চাকরি ছেড়ে দেওয়া।
৯। জ্বীন গ্রাহকদের তার কাছ থেকে কেনা এবং তার সাথে লেনদেন করতে বাধা দেয়া।
১০। যেখানেই ইনভেস্ট করে সেখানেই লস হওয়া।
১১। যথাযথ কাজ করার পরও সেলারি না বাড়ানো।
রিজিকে বাধার যাদুর লক্ষণসমূহ:
১. রিজিক রিলেটেড যেকোনো কাজের আগে অসুস্থ হয়ে যাওয়া।
২. যেকোনো কাজে কোন কারণ ছাড়াই প্রচুর নেগেটিভ ওয়াসওয়াসা আসা।
৩. আলসেমি বেড়ে যাওয়া। কোন কাজ করতেই ভাল না লাগা।
৪. বাধাগ্রস্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখা। যেমন: পিছন থেকে কিছু ধাওয়া করছে কিন্তু এগোতে না পারা, কোন ট্র্যাপে পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
৫. স্বপ্নে সাপ,কুকুর,বিড়াল,গরু ইত্যাদি দেখা।
৬. স্বপ্নে মৃত মানুষ,কবর দেখা।
৭. স্বপ্নে অচেনা যায়গা, উড়া, জলাশয়, নদী ইত্যাদি দেখা।
৮. স্বপ্নে উনেক উপড় থেকে পড়া, মারামারি, যুদ্ধ দেখা।
৯. হাত-পা অবশ অবশ লাগা সবসময়।
১০. চাকরি বা ব্যবসার প্রস্তাব আসলেই রাগ হওয়া অথবা এগোতে চাইলে রাগ হওয়া।
১১. ছোট কোন কাজ করতে অনেক দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়া।
১২. ফজরে অনেক এলার্ম এবং পরিবারের লোকদের ডাকাডাকিতেও ঘুম না ভাঙ্গা । ( এক্ষেত্রে মেক্সিমাম ক্ষেত্রে ফজরের সালাতের সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথেই পেশেন্টের ঘুম ভাঙ্গে)।
১৩. টাকা ইনকাম করলে বারাকাহ না পাওয়া। অনেক বেশি ঋণ হয়ে যাওয়া।
১৪. কোন কারণ ছাড়াই ব্যবসার সেলস বন্ধ থাকা বা চাকরিতে কলিগদের সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়া।
১৫. যোগ্যতা থাকা সত্তেও চাকরির ক্ষেত্রে বারবার রিজেক্ট হওয়া।
১৬. মাথা রিলেটেড বিভিন্ন সমস্যা থাকা। যেমন: মাইগ্রেন, পড়াশোনা করতে না পারা, পরীক্ষার আগে অসুস্থ হয়ে যাওয়া, প্রচুর পরিমাণে ভুলে যাওয়া, মাথা সবসময় ভার হয়ে থাকা।
১৭. কারও সাথেই সম্পর্ক ভাল না থাকা। প্রথম দিকে দু-চার দিন ভাল থাকলে এরপর দিনে দিনে সম্পর্কের অবনতি হওয়া।
রিযিকে বাধার জাদু নষ্টের রুকইয়াহ পরামর্শ:
আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রিযিক আসে, আল্লাহই একমাত্র রিযিক দাতা। তাই তার উপরই ভরসা উচিত এবং গোনাহ্ থেকে বেঁচে থাকা জরুরী, উপার্জন হালাল হওয়া আবশ্যক। যদি গোনাহে লিপ্ত থাকেন আর হারামভাবে উপার্জন করেন, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব ও শাস্তি আসা খুবই স্বাভাবিক। একদিকে উপার্জন করবেন অন্য দিকে দেখবেন একেরপর এক বিপদ ও বড় কোনো রোগব্যাধির কারণে আয়ের চেয়েও অনেক বেশি চলে যাচ্ছে। রিযিকের পেরেশানি লেগেই আছে। আজ না হোক কাল, দুইদিন পরেও হলেও এর প্রতিক্রিয়া পড়বেই। দুনিয়ায় না হলেও আখেরাতে তো অবশ্যই এর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
জ্বীন জাদু আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই যদি এইগুলো থেকে বেঁচে থাকার জন্য চেষ্টা করেন, আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন, কুরআনে বর্ণিত দুআ ও আমল করেন তাহলে আশা করা যায় যে আপনার কখনো রিযিকে পেরেশানি আসবেনা। ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা হলে ভিন্ন কথা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য্য ধরে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
কুরআন হাদীসে রিযিকের ব্যপারে অসংখ্য পরামর্শ ও নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আমরা সেগুলো জানি না, কখনও জানার চেষ্টাও করিনা। আর মানুষ যেকোনো বিষয়ে খারাপ মানুষ গুলোর কাছেই কেন যেন যায় বেশি। কবিরাজ, ফকির ও তান্ত্রিকদের কাছে না গিয়ে সেসব নির্দেশনা ফলো করুন। ঠিকমতো সামলাত আদায় করুন, আল্লাহর কাছে রিযিকের জন্য বেশি বেশি দুআ করুন। রিযিকের বারাকাহ লাভের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের পর সূরা ওয়াকিয়াহ পাঠ করার পরামর্শ দিয়েছেন। অনেক সাহাবায়ে কেরাম সেই আমল করে অকল্পনীয় উপকারও পেয়েছেন। অথচ আমরা কয়জন তা আমল করি! জ্বীন জাদু ও মানুষের নজর-হিংসা থেকে বেঁচে থাকার জন্য সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন আমল গুলো কয়জন করি! সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন আমল না করলে, আল্লাহর যিকিরের জন্য দুআ না করলে রিযিকের উপর হিংসুকদের নজর হাসাদ লাগবেনা তো কি লাগবে? অভাব আসবে না তো আর কি হবে!? সুতরাং জ্বীন জাদু ও নজর-হিংসা আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই সতর্ক হোন এবং কুরআনে বর্ণিত নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করুন।
জ্বীন জাদু আক্রান্ত হয়ে গেলে তা থেকে মুক্তি ও সুস্থতার জন্য শরয়ী চিকিৎসা রুকইয়াহ গ্রহণ করতে হবে এবং কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত সেসব নির্দেশনা গুলো মেনে চলতে হবে। সঠিকভাবে রুকইয়াহ চালিয়ে গেলে শারীরিক মানসিক এবং সবদিক থেকেই উন্নতি টের পাবেন ইনশাআল্লাহ। দুআ ও রুকইয়াহ’র পাশাপাশি হালাল উপায়ে উপার্জনের চেষ্টা করতে হবে। অনেকের ভাবটা যেন এমন যে, দিনভর যাহাই করুক না কেন, চাহিবামাত্র আল্লাহ তাআলা দিতে বাধ্য থাকিবেন! অনেকেই একদিনেই বড়লোক হয়ে যেতে চায়, বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা লস খেয়ে ঋণের যে পাহাড়সম স্তুপ গড়েছে, সেটার উসূল যেন সে একদিনেই পেতে চায়!
সেলফ রুকইয়াহ:
নিম্নের পরামর্শ ব্যবসায় আয় উন্নতি হচ্ছে না শুধু এর জন্য নয় বরং চাকরি না হওয়া, বারবার চাকরি চলে যাওয়া, ব্যবসায় আয় না হওয়া, রিযিকে বারাকাহ না পাওয়া সহ রিযিকের সকল বিষয়ের জন্যই প্রযোজ্য।
ক)
১। প্রথমে এক সপ্তাহ বা ১৪ দিন বদনজরের রুকইয়াহ করুন। কারণ রিযিকে বাধার ক্ষেত্রে বদনজর অনেক বেশি প্রভাব ফেলে।
২। এরপর জাদুর রুকইয়াহ করুন। বরই পাতার গোসল করুন।
৩। পেটে জাদু থাকতে পারে বুঝতে পারলে ইস্তিফরাগ ও লুজ মোশন করুন।
৪। পাশাপাশি রিযিক সংক্রান্ত আয়াত গুলো প্রতিদিন বা সাধ্যমত অল্প অল্প করে পাঠ করুন। অন্তত কমন বা সহজ কিছু আয়াত পাঠ করতে পারেন।
৫। আয়াতুল হারক, আট সূরা পাঠ করুন।
৬। তিলাওয়াত করা সম্ভব না হলে বা নারীরা পিরিয়ড অবস্থায় এইগুলোর অডিও শুনতে পারেন।
৭। জাদু, বদনজর হাসাদ নবায়ন এবং জ্বীনের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন আমল অবশ্যই করবেন।
খ)
কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পরামর্শ ও নির্দেশনা গুলো গুরুত্বসহকারে পালন করুন।
১। তাকওয়া অর্জন করা
তাকওয়া মানে হচ্ছে মহান আল্লাহর ভয়। এটি আয়-রোজগার লাভের অন্যতম একটি উপায়, এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ বের করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ২-৩)।
২: সালাত আদায় ও ইবাদত করা।
সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিকে বরকত হয়। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)
৩: তওবা-ইস্তিগফার করা:
তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০-১২; সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত: ৮২)
৪: আল্লার ওপর ভরসা রাখা:
যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে; তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন করা এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৫)
৫: পাপাচার থেকে মুক্ত থাকা
সবসময় পাপাচার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা। কারণ নেক আমল ও ভালো কাজে যেমন মানুষের জীবন-জীবিকায় বরকত আসে, তেমনি পাপ কাজ জীবন-জীবিকার বরকত নষ্ট করে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেবল দোয়াই ভাগ্য প্রতিহত করে, নেক কাজে আয়ু বাড়ে আর বান্দা পাপের কারণে জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২৪১৩)
৬: হজ-ওমরাহ পালন:
সামর্থ্য থাকলে হজ্জ ও উমরাহ পালন করুন। বারবার হজ ও ওমরাহ পালন করার দ্বারা রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-র বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা লাগাতার হজ ও ওমরাহ পালন করতে থাকো। কারণ, এর দ্বারা এমনভাবে অভাব ও গুনাহ দূরীভূত হয়; যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০; নাসায়ি, হাদিস: ২,৬৩১)
৭: আত্মীয়তার সুসম্পর্ক বজায় রাখা:
রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি আমল হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে এবং তাদের হক যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৬; সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৬)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বোখারি, হাদিস: ৫,৯৮৫)।
৮: আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় এবং দান-সদকা করা:
দান-সদকা করার মাধ্যমে রিজিক বাড়ে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো; তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা, আয়াত: ৩৯)
৯: গরিব-অসহায়ের প্রতি সদয় হওয়া
যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিক বাড়ে, তার অন্যতম হলো গরিব-অসহায় মানুষের প্রতি সদয় হওয়া। রাস্তাঘাটে গরিব-অসহায় মানুষকে হাত বাড়াতে দেখলেই সবাইকে এক পাল্লায় মেপে খারাপ আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের (ধনী লোকদের) সম্পদে প্রার্থী (দরিদ্র) ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ২,৮৯৬)
১০: বিয়ে করা:
অবিবাহিত হলে সামর্থ্য থাকলে বিয়ে করা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ-তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহ-তায়ালা প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নূর, আয়াত: ৩২)
১১: জীবিকার সন্ধান ও হালাল পন্থায় অবলম্বন করা:
রিজিকে বরকতের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, হালাল পন্থায় আয় করা। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘হালাল জীবিকা সন্ধান করা নির্ধারিত ফরজসমূহের পরে বিশেষ একটি ফরজ।’ (শুআবুল ইমান, বায়হাকি; কানযুল উম্মাল: ৯২০৩)।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, আয়াত: ১০)
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ (বোখারি, হাদিস: ১,৪৮০; মুসলিম, হাদিস: ১,০৪২)
শুকরিয়া আদায় করা : শুকর আদায় করার দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭)।
১২: সূরা ওয়াকিয়াহ পাঠ করা:
প্রতিদিন মাগরিব বা ইশার পর এই সূরা তিলাওয়াত করলে আল্লাহ রিজিকে বরকত দান করেন। সূরা আল-ওয়াকিয়া-কে রিজিক বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)–এর দেওয়া বর্ণনা আছে যে, ‘প্রতি রাতে যে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, দারিদ্র্য কখনো তাকে স্পর্শ করবে না।’ এ জন্য এই সুরাটিকে সুরা গনি বা সম্পদ লাভের সুরা-ও বলা হয়।
পাশাপাশি ওইসব দুআ পাঠ করা যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করার জন্য বলেছেন, নিজে পাঠ করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে শিখিয়েছেন। যেমন-
রিযিক লাভের কিছু দোয়া :
১.
اللهم اغفر لي ذنبي وَوَسَحُ لِي فِي رِزْقِي وَبَارِك لي فيما رَزَقْتَنِي
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি, ওয়া ওয়াসসি লি ফি রিযকি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাজাকতানি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন, আমার ঘর প্রশস্ত করে দিন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০০)
২.
اَللَّهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
আল্লা-হুম্মাকফিনী বি’হালা-লিকা ‘আন ‘হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক
হে আল্লাহ্, আপনি আপনার হালাল প্রদান করে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন এবং আপনার দয়া ও বরকত প্রদান করুন আমাকে। আপনি ছাড়া অন্য সকলের অনুগ্রহ থেকে বিমুক্ত করে দিন। (তিরমিজিঃ ৩৫৬৩)
৩.
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বেশি বেশি এ দোয়াটি পাঠ করতেন-
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল ‘হাঝানি ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দালা’ইদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল
হে আল্লাহ্ আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি দুশ্চিন্তা, দুঃখ-বেদনা, মনোকষ্ট, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, কাপুরুষতা, ঋণের বোঝা এবং মানুষের প্রাধান্য বা প্রভাবের অধীনতা থেকে। (বুখারীঃ ২৮৯৩)
এছাড়াও আরো অনেক দোয়া আছে। পাশাপাশি নিজের ভাষায়ও বেশি বেশি দোয়া করতে পারেন।
আল্লাহ তাআলা সকলের রিযিকের পেরেশানি দূর করুন এবং উত্তম রিযিকের ব্যবস্থা করুন ও রিযিকে বারাকাহ দান করুন আমীন।