মাসনূন দুআ: জ্বীন, জাদু, বদনজর ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে নিরাপত্তার মাসনূন দুআ

জ্বীন, জাদু, বদনজর ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে নিরাপত্তার বা হেফাজতের মাসনুন দুআ ও আমল। সজাগ মনে সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন দোয়াগুলো পড়লে ইয়াজুজ-মাজুজবিরোধী যুলকারনাইনী প্রাচীরের চেয়েও বেশি সুরক্ষিত থাকা যাবে।

সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন দুআ

(১)আয়াতুল কুরসি =১ বার

اللّٰهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِى يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهٖ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلاَ يَؤُوْدُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِىُّ العظيم”

উচ্চারণ- আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম।

আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূমু। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহূ মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা বিইযনিহী। ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহীতূনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যূল ‘আযীম।

(২)সুরা তাওবাহ ১২৯ নং আয়াতের অংশ = ৭বার

حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু, আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আর্শীল আজীম।

(৩) এই দোয়াটি ৩ বার পড়বেন

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ

উচ্চারণ: বিস্‌মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আ ইস্‌মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম

(অর্থঃ আল্লাহ্‌র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”)

( ৪) এই দোয়া টি ৩ বার পড়েবেন

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التامَّاتِ مِنْ شرِّ مَا خَلَقَ

উচ্চারণ: আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্ব।

(অর্থঃ আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।)

৫)তিন কুল ( সূরা ইখলাস সূরা ফালাক সূরা নাস) ৩বার পড়বেন।

(৬) এই দোয়া টি ১০০ বার পড়বেন-

لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

উচ্চারণঃ- লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহূ লা- শারীকালাহূ, লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর।

অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।

(৭) সম্ভব হলে অবশ্যই সূরা বাকারার প্রথম ৫ আয়াত ও শেষ দুই আয়াত ও ১বার করে পড়বেন।

রাতে ঘুমানোর পুর্বের আমল

১.. আয়াতুল কুরসি , সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (১ বার )

২.. সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত (১ বার )

৩. তিন কুল পড়ে দু’হাতে ফুঁ দিয়ে সমস্ত শরীর মুছে দিবেন ( ৩ বার )

৪..৩৩ বার سبحان الله ৩৩ বার الحمد لله ৩৪ বার الله اكبر পড়বেন।

অন্যান্য সময়ের আমল

১) / ঘর থেকে বের হওয়ার সময় একবার পড়বেন ( বাধ্যতামূলক )

بسم الله توكلت لا حول ولا قوة إلا بالله

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহ তাওয়াক্কালতু লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা-হ বিল্লা-হ।

২) / যখনই হায় আসবে মুখের ডান হাতের পিঠ রাখবেন ( যেন শয়তান মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে না পারে)

৩)/ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পুর্বে মিসওয়াক করা।

৪)/ প্রতি ফরয নামাযের পর ১ বার আয়াতুল কুরসি পড়বেন।

৫)/ ঘুমের মাঝে ভয় পেলে বা অন্যসময় খারাপ অনুভূতি হলে পড়া

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وشَرّ عِبَادِهِ ، ومِنْ هَمَزَاتِ الشّيَاطِينِ وأَنْ يَحْضُرُونِ

উচ্চারণঃ আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্দুরূন।

৬)/ টয়লেটে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করবেন, প্রবেশের সময় দোয়াটি পড়বেন-

بِسْمِ اللَّهِ، اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

উচ্চারণঃ- বিসমিল্লা-হ, আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবা-ইছ।

৭)/ টয়লেট থেকে ডান পা দিয়ে বের হবেন, বের হওয়ার পর পড়বে-

غُفْرَانَكَ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ اَذْهَبَ عَنِّيْ الْاَذٰى وَعَافَانِيْ

উচ্চারণঃ- গুফরাানাকা আলহামদু লিল্লাা হিল্লাযী আযহাবা ‘আন্নীল আযাা ওয়া ‘আা ফাা নী

৮)/ বিয়ের প্রথম রাতে স্ত্রীর কাছে গিয়ে পড়া

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ

[*] এবিষয়ে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, অনেকে এটি স্ত্রীর মাথায় হাত রেখেই পড়তে হবে। কিছু হাদিসে মাথায় হাত রেখে পড়ার কথা থাকলেও, প্রসিদ্ধ হাদিসগুলোতে কিন্তু স্ত্রীর কাছে গিয়ে শুধু পড়ার কথা আছে। (সুনানে আবি দাউদ ২২৪৩ এবং ইবনে মাযাহ ১৯০৮ দ্রষ্টব্য)

৯)/ সহবাসের পূর্বে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ুন

بِاسْمِ اللَّهِ اَللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণঃ- বিসমিল্লা-হি, আল্লা-হুম্মা, জান্নিব্‌নাশ্‌ শাইত্বা-না ওয়া জান্নিবিশ শাইত্বা-না মা রাযাক্ক্‌তানা।

১০)/ দৈনিক একবার হলেও মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়া

أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: মসজিদে প্রবেশের সময় কেউ এটা পড়লে শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারাদিনের জন্য আমার থেকে রক্ষা পেয়ে গেল। (সুনানে আবি দাউদ, ৩৯৩)

১১. বিসমিল্লাহ বলে দরজা-জানালা লাগানো। খাওয়ার আগে এবং ঘরবাড়িতে প্রবেশের সময় বিসমিল্লাহ বলা।

( বিঃদ্রঃ – মেয়েরা পিড়িয়ডের সময়ও এই আমলগুলো করবেন। অবশ্যই করতে হবে। নিরাপত্তা ও জিন যাদু টোনা থেকে মুক্তি র নিয়তে। কোনো নেকি বা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া।এই আমল কোনো দিন বাদ দেওয়া যাবেনা)

শেয়ার করুন -

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top