গত পর্বগুলো থেকে আশা করি বদনজর (evil eye) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এ পর্বে বদনজর হাসাদের রুকইয়াহ চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই যদি শুরুতেই তা জানা যায় ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা হয় তাহলে সহজেই সুস্থ হওয়া যায়। কিন্তু যদি শুরুতেই সঠিক চিকিৎসা করা না যায় তখন সমস্যা জটিল হয়ে যায়। ফলে একজন রোগী তিলে তিলে শেষ হয়ে যায়। আর তখন চিকিৎসাও জটিল হয়ে যায়। বদনজর জ্বীন জাদুর বিষয়টিও এরকম। জ্বীন জাদু ও বদনজরে আক্রান্ত হয়ে অনেকে শুরুতে বুঝতে পারেন না যে তিনি এসবে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে দিনের পর দিন ভুগতে থাকেন এবং সমস্যা অনেক জটিল হয়ে যায়। বিশেষ করে বদনজরের ক্ষেত্রে।
বদনজর হচ্ছে একটি নিরব ঘাতক। তিলে তিলে মানুষকে শেষ করে দেয়। এমন কোনো রোগব্যাধি বা ক্ষতি নেই যা বদনজরের কারণে হতে পারে না। বদনজর সম্পর্কিত হাদীস গুলো পড়লে তা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন। কিন্তু রুকইয়াহ সম্পর্কিত জ্ঞান না থাকায় অনেকেই বুঝতেই পারে না যে তার বদনজরের সমস্যা আছে বা তার সমস্যা গুলো বদনজরের কারণে হচ্ছে। এজন্য অনেকেই শারীরিক মানসিক বিভিন্ন সমস্যার জন্য দীর্ঘদিন মেডিকেল ট্রিটমেন্ট করেও কোনো লাভ হয়না।
জ্বীনের জন্যও নজর-হাসাদ এক শক্তিশালী হাতিয়ার। কারো জ্বীনের সমস্যা আছে মানেই তার বদ নজরের সমস্যাও আছে। কারণ জ্বীন প্রথমে নজর হাসাদের মাধ্যমেই ক্ষতি করে এবং উপযুক্ত জায়গা তৈরি করে। তাই এবিষয়ে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং আরো সতর্ক হতে হবে।
যদি আক্রান্ত হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করা যায় তাহলে সবচেয়ে ভালো। কথায় আছে এবং বাস্তবতা হচ্ছে -প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। এইগুলো প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে সুন্নাহসম্মত জীবনযাপন করা। তাই বদনজর ও প্যারানরমাল সমস্যা থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যার হেফাজতের মাসনুন আমলগুলো নিয়মিত করুন এবং যথাসম্ভব সুন্নাহসম্মত চলার চেষ্টা করুন।
যাইহোক কেউ যদি নিজেকে বদনজরে আক্রান্ত মনে করেন বা বুঝতে পারেন তাহলে নিম্নোক্ত নিয়মে রুকইয়াহ করলে সুস্থ হয়ে যাবেন- ইনশাআল্লাহ।
তবে রুকইয়াহ শুরু করার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- গায়ে/ঘরে কোন তাবিজ থাকলে অবশ্যই তা খুলে নষ্ট করে ফেলতে হবে আগে। কোন মূর্তি, পুতুল, ছবি ইত্যাদি থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। ঘর ও শরীরকে আগে হারাম থেকে মুক্ত করতে হবে। ঘরে কুকুর থাকা চলবে না।
বদনজরের রুকইয়াহ তুলনামূলক একটু সহজ। জ্বীন জাদুর রুকইয়াহ’র মতো ঝামেলা ও কষ্টের তেমন কিছু নেই। সহজেই সুস্থ হওয়া যায়। আপনার যদি শুধু বদনজরের সমস্যা থাকে তাহলে এর জন্য আপনার আমাদের কাছে বা রাক্বীর কাছে আসার প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেই যদি নিম্নোক্ত নিয়মে কিছুদিন সেলফ রুকইয়াহ করেন তাহলেই সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। তবে সরাসরি রুকইয়াহ করলে একটু বেশি উপকৃত হবেন।
বদনজরের রুকইয়াহ
১. নিচের আয়াত, সূরা ও দোয়া গুলো প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট করে সকাল বিকাল দৈনিক দুইবার তিলাওয়াত করবেন –
বদনজরের সূরা ও আয়াত
সূরা ফাতিহা, সূরা বাকারাহ-১-৫ , ৬০, ৬৯, ১০৯, ২৪৭, আয়াতুল কুরসি(২৫৫), সূরা মু’মিনুন-৯৭-৯৮, সূরা নিসা-৩২, ৫৪, সূরা ইউসুফ-৬৭, সূরা কাহাফ-৩৯, সূরা ক্বামার-১২, সূরা মুলক-৩-৪, সূরা ক্বলম-৫১-৫২, সূরা আদ দাহর (ইনসান)-৬, সূরা ইখলাস, ফালাক, সূরা নাস
হাদিসে বর্ণিত কিছু দুআ
১.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
২.
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
৩.
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
৪.
بِسْمِ اللّٰه ِالَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهٖ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ العَلِيْمُ
৫.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰه ِالتَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
৬.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهٖ وَعِقَابِهٖ وَشَرِّ عِبَادِهٖ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ
৭.
أَعُوذُ بِاللَّهِ السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِن الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ، مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ
৮.
.اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
দুআগুলোর ধারাবাহিক উচ্চারণ–
১. আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ। মিং কুল্লি শাইত্বা-নিও- ওয়াহা-ম্মাহ। ওয়ামিং কুল্লি “আঈনিল্লা-ম্মাহ।
২. বিসমিল্লা-হি আরকীক। মিং কুল্লি শাইয়িই ইউ’যীক। মিং শাররি কুল্লি নাফসিন আও “আইনি হাসিদ। আল্লা-হু ইয়াশফীক। বিসমিল্লা-হি আরকীক।
৩.
বিসমিল্লা-হি ইউবরীক। ওয়ামিং কুল্লি দা-ঈই ইয়াশফীক। ওয়ামিং শাররি হাসিদিন ইযা- হাসাদ। ওয়া শাররি কুল্লি যী “আঈন ।
৪. বিসমিল্লাহিল্লাঝী লা ইয়াদুর্রু মাআসমিহি শাইউং ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।
৫. আ’ঊযু বি কালিমাতিল্লাহি মিং শার্রি মা- খালাক্ব
৬. আঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাহ, মিন গাদাবিহি ওয়া ইক্বাবিহি ওয়া শার্রি ইবাদিহ্, ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়াতি-নি ওয়া আই’ইয়াহ্দুরূন।
৭. আউযুবিল্লাহিস সামি-য়িল আলি-মি মিনাশ শাইতানির রাজিম, মিন হামযিহি ওয়া নাফখিহি ওয়া নাফসিহ্।
৮. আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স। আযহিবিল বা’স । ইশফি ওয়াআংতাশ শা-ফী। লা-শিফাআ ইল্লা-শিফাউক। শিফাআল লা-ইউগা-দিরু সাক্বামা-।
২) পাশাপাশি রুকইয়াহ তিলাওয়াতের সময় পানি নিয়ে নিবেন। পড়ার পানিতে ফুঁ দিবেন। এরপর এই পানি থেকে দৈনিক কয়েকবার বা যখনই পিপাসা লাগবে তখনই নতুন পানি মিশিয়ে মিশিয়ে পান করবেন।
৩. এছাড়া কোন অঙ্গে ব্যাথা থাকলে এসব আয়াত ও দোয়া গুলো পড়ে তেলে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন মালিশ করতে পারেন।
৪. প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর বদনজর ও হাসাদের প্রভাব নষ্টের নিয়তে তিন কুল তথা সূরা ইখলাস ফালাক ও সূরা নাস তিনবার করে পাঠ করে উভয় হাতে ফুঁ দিন। হালকা থুথু মিশ্রিত ফুঁ দিবেন। এরপর মাথা থেকে পা পর্যন্ত যথাসম্ভব পুরো শরীর মুছে দিবেন।
৫. বদনজর ও হাসাদের প্রভাব নষ্টের নিয়তে প্রতিদিন ফজরের পর ও মাগরিবের পর বা ঘুমের পূর্বে ১ বার করে খালিদ আল হিবশীর ১.৩৩ মিনিটের বদনজর ও হাসাদের অডিওটি শুনবেন। অডিওটি আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটেও পাবেন।
৬. দৈনন্দিন নিরাপত্তা বা হেফাজতের মাসনুন আমলগুলো নিয়মিত স্থায়ীভাবে চালিয়ে যাবেন। মানে সুস্থ হয়ে গেলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্তই এইগুলো করবেন। যেন আর কোনো সমস্যা না হয়। (নিরাপত্তার আমলগুলো পরবর্তীতে পোস্ট করা হবে। আমাদের ওয়েবসাইট থেকে নিবেন।)
৭. নিম্নোক্ত নিয়মে বদনজর ও হাসাদ নষ্টের নিয়তে লাগাতার তিনদিন বা সাতদিন গোসল করবেন। বদনজরদাতার পরিচয় জানা থাকলে তার ওযুর পানি মিশিয়ে নিতে পারলে ভালো।
রুকইয়ার গোসলের পদ্ধতি
এক বালতি পানি নিন। সম্ভব হলে সামান্য জমজম, বৃষ্টি বা সাগরের পানি মিশিয়ে নিন। তারপর ওই পানিতে কব্জি পর্যন্ত বা যতটুকু সম্ভব দুইহাত ডুবিয়ে রেখে নিচের সূরা ও দুআ গুলো ৩/৭ বার করে পড়বেন।
১.দরুদ শরিফ, ২.সূরা ফাতিহা, ৩.আয়াতুল কুরসি, ৪.সূরা ইখলাস, ৫.সূরা ফালাক্ব, ৬.সূরা নাস
৭.
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উ”ঈযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ। মিং কুল্লি শাইত্বা-নিও- ওয়াহা-ম্মাহ। ওয়ামিং কুল্লি “আঈনিল্লা-ম্মাহ।
৮.
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِي نفسي، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
বিসমিল্লা-হি আরকী নাফসী। মিং কুল্লি শাইয়িই ইউ’যীক। মিং শাররি কুল্লি নাফসিন আও “আইনি হাসিদ। আল্লা-হু ইয়াশফীক। বিসমিল্লা-হি আরকীক।
৯. দরুদ শরীফ।
এইগুলো পড়ার পর পানি থেকে হাত উঠাবেন। তবে ফুঁ দিবেন না পানিতে। তারপর এই পানি থেকে ”দুই তিন ঢুক” (সুস্থতার নিয়তে) পান করবেন আর বাকিটা দিয়ে গোসল করবেন। প্রথমে পানি মাথার পিছনে ঢালবেন। আর বাকি গোসল স্বাভাবিক নিয়মেই করবেন।
আর পান করার উপযোগী না হলে আলাদা ভাবে পড়ে তা থেকে দুই তিন ঢুক পান করে বাকিটা গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নিবেন। এরপর তিনবার কুলি করবেন, তিনবার নাকি পানি দিবেন। এরপর গোসল করে নিবেন। তবে আলাদা ভাবে পানি তৈরি করলে একটু বা এক গ্লাস পানি না নিয়ে বরং যতটুকু সম্ভব বেশি পরিমাণে পানি নিবেন।
প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করে নিবেন বা শরীর ভালোভাবে ভিজিয়ে নিবেন। এরপর সাবান, শ্যাম্পু ও নতুন পানি দিয়ে ইচ্ছেমত গোসল করতে পারবেন।
লক্ষণীয়
১) যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে হয় তখন এসব অবশ্যই বাহিরে এনে পড়তে হবে
২) সূরা ও দুআ গুলো মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখেও পড়তে পারবেন।
৩) কোনো কারণে পানিতে হাত রাখা অসুবিধা হলে পড়ার পর পানিতে ফুঁ দিবেন।
৪) নরমাল পানি দিয়েই গোসল করবেন। তবে শীতকালে সামান্য গরম করে নিতে পারেন।
৫) নিজে পড়তে না পারলে অন্য কেউ পড়ে দিলেও হবে। তবে এক্ষেত্রে শুধু পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে দিবে।
৬) নারীদের পিরিয়ডের সময় তাকে অন্য কেউ পানি তৈরি করে দিবে।
৭) অন্য কেউ না থাকলে পূর্বোল্লিখিত দুআ গুলো ৩/৭ বার করে পড়ে নিজেই তৈরি করে নিবেন।
৮) অথবা পান করার পানি থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করে নিবেন।
৯) উত্তম হচ্ছে, প্রথমে রুকইয়াহ পাঠ করে বা শুনে এরপর গোসল করতে যাবেন। তবে আবশ্যক নয়।
এভাবে সমস্যা অনুযায়ী ৩-৭ থেকে দিন রুকইয়াহ করবেন। সমস্যা বেশি মনে হলে ১৪ দিন করবেন । আরো বেশি মনে হলে ২১ দিন করতে পারেন। অথবা আপনার রাক্বীর পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিন রুকইয়াহ করবেন।
যদি আপনার কোনো সমস্যা থাকে তাহলে রুকইয়াহ’র সময় আপনার বিভিন্ন ইফেক্ট হতে পারে। যেমনঃ প্রচণ্ড ঘুম আসা, মাথাব্যথা করা, হাত-পা শিরশির করা, শরীর গরম লাগা, ঘেমে যাওয়া, বেশি বেশি প্রসাবের চাপ লাগা, চোখ দিয়ে পানি আসা, অস্থির লাগা, কারো প্রচন্ড জ্বর চলে আসা, সর্দি লেগে যাওয়া, অসুস্থবোধ করা। ইত্যাদি ইত্যাদি। ইতিপূর্বে একটি পর্বেও এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এরপরেও ধৈর্য্য ধরে রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে। ঘুম আসলে জেগে থাকার চেষ্টা করবেন। মাঝখানে রুকইয়াহ বন্ধ করা যাবে না যে, আচ্ছা একটু পর তিলাওয়াত করবো বা শুনবো। কিংবা একেবারে ছেড়ে দেয়া যাবে না। এরজন্য ওষুধও খাওয়া যাবে না। এইগুলো সাময়িক ইফেক্ট। রুকইয়াহ করতে থাকলে আস্তে আস্তে ইফেক্ট কমে আসবে। আর সমস্যা সমাধান হলেই ভালো ফিল করতে লাগবেন.. ইনশাআল্লাহ! দুশ্চিন্তার কারণ নাই…
অনেকেই এরকম হলে রুকইয়াহ ছেড়ে দেন, ভয় পেয়ে যান বা মনে করেন এইগুলো মেডিক্যাল সমস্যা, চিকিৎসা করি, ওষুধ খাই, এরপর সুস্থ হলে রুকইয়াহ করবো। এটা সম্পূর্ণ ভুল, কখনও এমনটা করা যাবেনা। এসময় সময় ওষুধ খেলে দ্রুত সুস্থতার প্রতিবন্ধক হতে পারে বা সমস্যা জটিল হয়ে যেতে পারে। রুকইয়াহ করতে থাকলেই এইগুলো থেকেও সুস্থ হয়ে যাবেন। তবে মেডিসিন ব্যবহার করা একেবারে নিষেধ নয়। এজন্য প্রয়োজনে আপনার বা একজন অভিজ্ঞ আলেম রাক্বির পরামর্শ নিতে পারেন।
সমস্যা ভালো হয়ে গেলে রুকইয়াহ শুনলে আর কিছুই ফিল করবেন না। তবে সমস্যা সমাধান হওয়ার পরেও ২-৩দিন রুকইয়াহ করা উচিত।
অন্য কারো জন্য রুকইয়াহ করতে চাইলে তার মাথায় হাত দিয়ে সূরা, আয়াত ও দুআ গুলো পাঠ করবেন। পানিতে ফুঁ দিয়ে খেতে দিবেন। তেলে ফুঁ ব্যথার স্থানে মালিক করতে বলবেন। বদনজরের গোসল করতে বলবেন বা পড়া পানি গোসলের পানিতে মিশিয়ে নিতে বলবেন।
আরো কিছু লক্ষণীয় বিষয়
ক) যাদের রাতে ঘুমের সমস্যা হয়, ঘুমুতে ভয় পান, কোন ছায়া দেখেন, মনে হয় কেউ আছে, বারবার ঘুম ভেঙ্গে যায়, একদম ঘুমেই হয়না তারা নজরের রুকইয়াহ করার পাশাপাশি আটসুরার রুকইয়াহ শুনবেন। অডিওটি আমাদের ইউটিউব বা ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
খ) দিনে বা রাতের যেকোন সময় রুকইয়াহ করলেই হবে। এর জন্য ধরাবাঁধা কোনো সময় নেই।
গ) নারীরা পিরিয়ডের সময় কোরআন তিলাওয়াত করতে পারবেন না। তবে কোনো দুআ পড়তে ও রুকইয়াহ, কোরআন সরাসরি বা মোবাইলে শুনতে পারবেন। নিরাপত্তার মামনুন আমলগুলো করতে পারবেন, বরং অন্য সময়ের তুলনায় আরো অধিক গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে।
ঘ) সময় কম পেলে রুকইয়াহ কম করবেন, শুধু রুকইয়াহ তিলাওয়াত করতে পারেন বা শুধু অডিও শুনতে পারেন। নারীরা পিরিয়ডের সময় শুধু অডিও শুনবেন, আর দুআ গুলো ও পড়তে পারেন।
ঙ) রুকইয়াহ যদি ৭ দিনের বেশি করেন তাহলে মাঝে বিরতি দিয়ে তিনদিন তিনদিন বা সাতদিন করে রুকইয়াহ’র গোসলটা করতে পারেন। অথবা প্রথমে তিনদিন বা সাতদিন লাগাতার গোসল করে তারপর মাঝেমধ্যে রুকইয়াহ’র গোসল করতে পারেন। মানে যতদিন রুকইয়াহ করবেন ততদিন গোসলও করতে হবে।
চ) বদনজরের সাথে যদি জ্বীন, জাদু ও ওয়াসওয়াসার কোন একটির বা সব গুলো থেকেই কিছু কিছু বা বেশিরভাগ লক্ষণ মিলে যায় তাহলে একজন অভিজ্ঞ রাক্বীর সরণাপন্ন হওয়া উচিত।